কঙ্কালীতলা। হিন্দু পুরাণমতে 51 শক্তিপীঠের অন্যতম।
দক্ষযজ্ঞে দেবাদিদেব মহাদেবের অপমান সহ্য করতে না পেরে পার্বতী উমা যজ্ঞস্থলেই দেহত্যাগ করেন। পার্বতীর দেহত্যাগ মহাদেবকে ক্রোধে উন্মাদ করে তোলে। পার্বতীর প্রাণহীন দেহ স্কন্ধে ধারণ করে তিনি ত্রিভুবন তোলপাড় করে তোলেন। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে শিবের রোষানল থেকে রক্ষা করতে নারায়ন সুদর্শন চক্রকে প্রেরণ করেন পার্বতীর প্রাণহীন দেহকে খন্ড-খন্ড করতে। সুদর্শন চক্র দেবী পার্বতীর দেহকে ৫১টি খন্ড করেন। সেই ৫১টি খন্ড ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে পতিত হয়। সেই পবিত্র স্থানগুলিই ৫১ শক্তিপীঠ।
কঙ্কালীতলায় দেবীর কঙ্কাল পতিত হয়। দেবী এই পুণ্যপিঠে দেবগর্ভা নামে পূজিতা। দেবীর ভৈরব রুরু।
বোলপুর শহর থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে বোলপুর-লাভপুর রাজ্য সড়কের উপর উত্তর বাহিনী কোপাই নদীর তীরে একটি প্রাচীন জনপদ কঙ্কালীতলা। কঙ্কালীতলা প্রধান মন্দির দেবী দেবগর্ভার মন্দির, যা লোকমুখে কঙ্কালীতলা মন্দির নামে প্রসিদ্ধ। কঙ্কালীতলা এলে দর্শনার্থীরা বাবা ভোলেনাথের মন্দির, জগন্নাথ দেবের মন্দির এবং শ্মশান কালীর মন্দির দর্শন করতে পারেন। শ্মশান কালীর মন্দির-প্রাঙ্গণে নিয়মিত সাধুসন্তদের সমাগম হয়ে থাকে। পুরাণকথা শ্রবণ বা তত্ত্বজ্ঞান লাভ করতে সন্ধানী মানুষ সাধুসঙ্গ লাভ করতে পারেন। এছাড়াও সারাটা বছর ধরে নানা গ্রামীণ লোকায়ত অনুষ্ঠান প্রাণ পায় কঙ্কালীতলায়। বাংলার প্রাণের জীবনকাঠির সন্ধান যদি আপনি করেন, তাহলে একবার আপনাকে আসতেই হবে কঙ্কালীতলায়। প্রকৃতির অনাবিল প্রাচুর্যে আর ধর্মীয় অনুষঙ্গে আপনি খুঁজে পাবেন নিজেকে...যে 'আমি'কে হারিয়ে ফেলেছেন নাগরিক পরিমণ্ডলে, তথাকথিত সাফল্যের সংজ্ঞায়।